Link Search Menu Expand Document

বিদেশে উচ্চশিক্ষায় ভর্তির আবেদনে যেটা সবচেয়ে, সবচেয়ে বেশি গুরুত্নপূর্ণ, সেটা হলো Statement of Purpose, সংক্ষেপে SOP। আপনার খুব ভালো জিআরই স্কোর থাকতে পারে, খুব ভালো সিজিপিএ থাকতে পারে, কিন্তু ভালো SOP না থাকলে বেশ ভালো ঝামেলা বাঁধতে পারে। আবার আপনার অন্যগুলোয় কমতি থাকলেও ভালো SOP এর কারণে ভর্তির সম্ভাবনাও অনেকখানি বাড়তে পারে। তা কী কারণে এই SOP তে এতোটা, এতোটা গুরুত্ব দেয়া হয়? কীভাবে SOP ভালো করা যায়? সেটা নিয়েই এই লেখাটা। (সহজে মনে রাখার জন্য বা শেয়ার করার জন্য এই কেস সেনসিটিভ লিংক: http://bit.ly/AmitSOP। পড়ুন বিট.লি স্ল্যাশ অমিত এসওপি )

১) SOP যে কারণে এতোটা গুরুত্বপূর্ণ

SOP এর কাজ “কেন” এর উত্তর দেয়া; এই একটা মাত্র কারণে এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। তবে একটা কেন না, অনেকগুলো কেন!

  • কেন আপনি উচ্চ শিক্ষায় আগ্রহী?
  • কেন আপনি এই প্রোগ্রামে ভর্তি হতে চান?
  • কেন আপনি বর্তমানে যেখানে আছেন তা থেকে উচ্চ শিক্ষায় আসতে চান?
  • আপনার সিভিতে সিজিপিএ ভালো না, বা আপনার গবেষণায় অভিজ্ঞতা নেই, বা আপনার গবেষণায় অভিজ্ঞতা আছে কিন্তু সেটা অন্য বিষয়ে, বা আপনারই মতো আরেকজন শিক্ষার্থীর হয়তো একই রকম গ্রেড, টোফেল ইত্যাদি - তারপরেও কেন আপনাকেই এই প্রোগ্রামে নেয়া উচিৎ?
  • কেনই বা আপনি অনন্ত ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা থেকে উচ্চশিক্ষাই বেছে নিয়েছেন?

এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলোই SOP তে থাকা লাগে। বলা বাহুল্য, উপরের পয়েন্টগুলো গাইডলাইন মাত্র। সবগুলোই পয়েন্টই থাকা লাগবে, বা খালি এগুলোই থাকা লাগবে ব্যাপারটা এমন না। কী থাকবে, সেটা আপনারই সিদ্ধান্ত নিতে হবে পরিস্থিতি আর অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে।

২) ভালো SOP কীভাবে লিখবো?

আমি নিচের পয়েন্টগুলো সাধারণত মানার চেষ্টা করি, সেটা SOP হোক, আর গবেষণাপত্র লেখা। এগুলো মেনে চললে লেখার মান কিছুটা হলেও স্বয়ংক্রিয় ভাবে বেড়ে যায়:

  • Top-Down approach
  • তো আমি কী কঁইত্তাম? প্রশ্ন করতে না দেয়া
  • প্রত্যেকটা লাইন, প্রত্যেকটা প্যারাগ্রাফ এর একটা মাত্র উদ্দেশ্য পালন করতে হবে, এক্ষেত্রে আপনার SOP কে শক্তিশালী করা, আপনার পক্ষে যুক্তি দেয়া
  • যার দুঃখ, সেই বুঝে - তাই বুঝানোর - কষ্ট বা চ্যালেঞ্জিং ফ্যাক্টর কী ছিলো আপনার আপনি হওয়াতে
  • গুরুত্বের ভিত্তিতে কনটেন্ট সাজানো

গ্রামার ঠিক রাখা, ফন্ট সবখানে ঠিক মতো মেইনটেইন করা, ২ পৃষ্ঠার মাঝে SOP রাখা - এগুলো সবাই জানে, তাও মনে করিয়ে দিচ্ছি। কারণ আমরা সাধারণত আগে দর্শনধারী, পরে গুণবিচারী। আর যখন ১০টা SOP তে খালি আপনারটা এসব ঠিকমতো থাকবে না, তখন ঐ ৯টা এগিয়ে যাবে বলাই বাহুল্য। কিন্তু এগুলো “ভালো” SOP বানায় না।

ভালো SOP বানানোর পয়েন্টগুলো একটা একটা করে ব্যখা করি এখন।

ক) Top-Down Approach

আমেরিকায় আসার পরে অনেকগুলো Writing Workshop এ অংশ নিয়েছি, আবার এডভাইজরের থেকেও শুনেছি কিভাবে লেখা ভালো করা যায়। সবচেয়ে বেশি যেটা এখন পর্যন্ত শুনেছি, সেটা হলো লেখায় Top-Down Approach ফলো করা; মজার বিষয় - তাদের মতে বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা Bottom-up এ অভ্যস্ত। দুইটার ভিতরে পার্থক্যটা কী? নিচের দুইটা প্যারা পড়ুন উদাহরণ হিসেবে, বুঝে যাবেন।

প্রথমেই নিন আধা লিটার পানি। ফুঁটিয়ে জীবাণুমুক্ত করুন। তাতে মেশান এক চিমটি লবণ আর আধমুঠো গুড়। ছেঁকে নিন। ঘরেই তৈরি হয়ে গেলো খাবার স্যালাইন। রোগ বা তাপজনিত কারণে পানিশূন্যতা রোধ করতে এর বিকল্প নেই!

রোগ বা তাপজনিত কারণে যে পানিশূন্যতা হয়, তা রোধ করতে আপনি ঘরেই তৈরি খাবার স্যালাইন খেতে পারেন। এর জন্য প্রথমেই নিন আধা লিটার পানি। ফুঁটিয়ে জীবাণুমুক্ত করুন। তাতে মেশান এক চিমটি লবণ আর আধমুঠো গুড়। ছেঁকে নিন। তৈরি হয়ে গেল খাবার স্যালাইন।

এটা খুবই সংক্ষিপ্ত উদাহরণ, কিন্তু প্রথমেই ধরে নিন আপনি জীবনেও খাবার স্যালাইনের নাম শুনেন নাই, এটা কী জানেনও না। এই অবস্থায় আপনি প্রথমটা পড়লে শেষেরদিকে বুঝবেন কী নিয়ে আলাপ, আর সেটার কী গুরুত্ব।

পরেরটায় পাঠককে সরাসরি বলা হচ্ছে কী নিয়ে কথা হবে, কাজেই আঁধারে হাতড়ানোর সুযোগ নেই।

মজার বিষয় হচ্ছে আমরা ভাবিও ২য়টার মতো, কথা বলিও ২য়টার মতো। কিন্তু হয়তো কোন একটা কারণে ইংরেজি আমাদের মার্তৃভাষা না বলে, বা আমরা অভ্যস্ত না বলে প্রথমটার মতো করে লিখি। সুতরাং, আপনার লেখায় Top-Down approach প্রয়োগ করুন; খালি প্যারাগ্রাফ এর জন্য না, প্রতিটা লেখায়, প্রতিটা প্যারাগ্রাফে, প্রতিটা লাইনে। বিদেশিরাও (অন্ততঃ আমেরিকানরা!) Top-Down পড়েই অভ্যস্ত, আর ওভাবে লিখলে ঐ লাইন বা প্যারাগ্রাফের উদ্দেশ্য পরিষ্কার হয়ে যায়, তাতে পাঠকেরই সুবিধা।

খ) তো আমি কী কঁইত্তাম? প্রশ্ন করতে না দেয়া

আমরা সবাই SOP তে ভালো ভালো কথা লিখতে পছন্দ করি যেগুলোর সাথে উচ্চশিক্ষায় কেন আগ্রহী সেটার সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায় না। খুব কমন কিছু টপিক হলো ছোটবেলায় স্বপ্ন দেখতাম শিক্ষক হবো, স্ক্রুড্রাইভার দিয়ে খেলনা দফারফা করতাম, স্কুলে ফার্স্ট হয়েছি, হয়তো সব সাবজেক্টে ভালো করি নাই, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ গুলোয় করেছি, এসএসসিতে এইচএসসিতে এ+ পেয়েছি, ভেরি গুড স্কোর, ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু এই যে এগুলো লিখলাম - এগুলো দিয়ে আমি কী প্রমাণ করতে চাইছি? এগুলোয় ভালো করলেই বা গবেষণার সাথে কী সম্পর্ক? যে প্রোগ্রামে আবেদন করছি, যে এডভাইজরের সাথে কাজ করতে চাইছি, তার বা তাদের সাথে কী যোগসূত্র? এই উত্তরগুলো আসা চাই। যদি না আসে, তাহলে পাঠক ভাববে “তো আমি কী কঁইত্তাম?”; তারপরে আর ঠিক মতো না পড়েই আপনার SOP রেখে দিবে। ক্ষতিই যখন হবে, সুতরাং ঐসব ফেলে শুধুমাত্র যেগুলো দিয়ে আপনি উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্য প্রকাশ করতে পারবেন, বা যোগসূত্র দেখাতে পারবেন সেগুলোই শুধু রাখুন। আমি নিচের কয়েকটা পয়েন্টে আমার নিজের SOP এ কী লিখেছিলাম তার ভিত্তিতে উদাহরণ দিবো, আশা করি তখন আরো পরিষ্কার হবে বিষয়টা।

গ) SOP লেখার সময় যা মনে রাখা দরকার

প্রত্যেকটা লাইন, প্রত্যেকটা প্যারাগ্রাফ এর একটা মাত্র উদ্দেশ্য পালন করতে হবে, তা হলো আপনার উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্য বা কারণ প্রকাশ করা, আপনি যা দাবী করছেন তার পক্ষে প্রমাণ দেয়া, আপনার পক্ষে যুক্তি দেয়া। এটার জন্য নিচের পয়েন্টগুলো ফলো করতে পারেন:

  • লেখায় যা লিখবেন, তা দিয়ে প্রকাশ হবে বা যোগসূত্র স্থাপন হবে
    • আপনি কেন ঐ ডিপার্টমেন্টের ঐ প্রোগ্রামে ঢুকতে চান,
    • কী ভালো লেগেছে,
    • কী করবেন উচ্চ শিক্ষা শেষে,
    • কী স্বপ্ন আপনার,
    • আর কী কারণে মনে হয় এই প্রোগ্রামটা আপনার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে সাহায্য করবে
  • আপনার নিজের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে উদাহরণ দিতে পারলে খুব ভালো হবে, কারণ এটা একান্তই আপনার SOP; কীরকম? যেমন ধরুন আপনি “ক” বিষয়ে ভালো গ্রেড পেয়েছেন, সেটা আবার আপনার পছন্দের গবেষণার বিষয় “খ” এর সাথে মিলে। আপনি যদি বলেন “ক” ভাল্লাগে, সুতরাং “খ” এ আগ্রহী - এতে অবশ্য কাজ হবে না। ব্যখা করতে হবে, কেন “ক” ভালো লাগে আপনার কাছে। আর সেই ভালো লাগা থেকে ভালো করে পড়াশুনা করায় ভালো গ্রেড পেয়েছেন ভালো কথা, কিন্তু সেটার সাথে “খ” এর কী সম্পর্ক আছে আপনার মতে - সেই আলাপটাও করা লাগবে।

ঘ) যার দুঃখ সেই বুঝে - কিন্তু বুঝানোও লাগবে

আমরা দরকার মতো কমবেশি সবাই চাপাবাজি করতে পারি, কিন্তু কেন জানি আমরা নিজের কষ্টগুলোকে গোনায় ধরি না অর্জনের ক্ষেত্রে। যেমন ধরুন দুইজন শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদন করছে। একজন প্রথম সারির, কখনো কোন আর্থিক সমস্যায় পড়েনি, বাবা মা ভালো শিক্ষকের ব্যবস্থা করেছে, ভালো কলেজে পড়েছে; আরেকজন আর্থিক সমস্যায় ছিলো, টিউশনি করে এক-দেড়বেলা খেয়ে বাবা মায়ের দেখভাল করেছে, ভালো কলেজে পড়ার সুযোগও পায়নি। টপার হয়নি, কিন্তু খুব খারাপ রেজাল্টও করেনি, ক্লাসে প্রথম ২০-৩০% শিক্ষার্থীদের মাঝেই আছে।

খালি রেজাল্টের বিচারে প্রথমজন এগিয়ে থাকলেও, সার্বিক বিচারে দ্বিতীয় জন এগিয়ে যাবে কারণ তার অনেক বেশি কষ্ট সহ্য করে, অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়ে এগিয়ে যেতে হয়েছে। ২য় জনের অর্জন এজন্যই বেশি শ্রদ্ধার দাবিদার। কিন্তু ২য়জন যদি তার এই কষ্টগুলো, বাঁধার কথাগুলো প্রকাশ না করে, তার “খারাপ” রেজাল্টের ব্যখায় তুলে না ধরে তার এই কষ্টগুলোর কথা, তাহলে তো সে তার নিজের প্রতিই অবিচার করবে। সুতরাং, যার দুঃখ সেই বুঝলেও, অন্যকে বুঝানোর দায়িত্বও নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে অবশ্য, এগুলোর সাথে তার উচ্চশিক্ষার আবেদনের সম্পর্ক স্থাপন করা লাগবে।

যেমন এই উপরের উদাহরণ ধরেই বলি। ২য়জন এসব কষ্ট করে কিছু না কিছু নিশ্চয়ই শিখেছে, সময় ম্যানেজ করা, শিক্ষকতা, বা দায়িত্ববোধ, এগুলো কীভাবে তার উচ্চশিক্ষায় সাহায্য করবে সেটার ব্যখা আসা চাই। আর এসব “দুঃখের” কথা সব সময় লেখা লাগে অর্জন হিসাবে দেখাতে, অজুহাত হিসাবে দেখাতে না। “এই কারণে ওই কারণে গ্রেড ভালো হয় নাই, তাও আম্রে নেন” মনোভাব প্রকাশ পেলে সর্বনাশ!

আমার SOP এর ভিত্তিতে উদাহরণ দেই: আমি মাস্টার্সে যে কাজ করেছিলাম সেটা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ হিসাবে হয়তো খুব কঠিন কাজ হয়নি; কিন্তু আমি SOP এ কোথাও বলি নাই এটা খারাপ কাজ হয়েছে। বরং এটা বলেছি যে আমি সারা বাংলাদেশেই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ক প্রোগ্রামে প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের এক জন, কাজেই আমার টপিক ঠিক করতেই অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। সেই টপিক কীভাবে ঠিক করেছি সেটা নিয়ে কিছু আলাপের পর বলেছি সেটা নিয়ে কাজ করতে গিয়ে অন্যান্য আনুসাংঙ্গিক বিষয় নিজে নিজে শিখে কাজ করা লেগেছে। যদিও আমার অভিজ্ঞতা কম ছিলো, আমি যা করেছি তা ঠিক মতো গবেষণার পদ্ধতি মেনেই করেছি। আর ওগুলোর ভিত্তিতে গবেষণাপত্র প্রকাশ তো আছেই!

এগুলোর মাধ্যমে আমি পাঠককে বেশ কয়েকটা বিষয়ে “ক্লু” দিয়েছি - ১) আমি লেগে থাকতে জানি গাইডেন্স বা রিসোর্স কম থাকলেও, ২) আমি গবেষণার পদ্ধতি নিয়ে যারা মাত্র শুরু করছে তাদের থেকে অন্ততঃ বেশি জানি, ৩) আমি প্রত্যেকটা কাজের সাথে “কেন” এর উত্তর দিয়েছি - সুতরাং আমি প্ল্যান করে কাজ করি আর আমি জানি আমি যা করেছি তা কেন করেছি।

ঙ) গুরুত্বের ভিত্তিতে কনটেন্ট সাজানো

আপনার SOP তে আপনি অনেক কিছুই হয়তো লিখবেন; বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ বা স্কুলের কাহিনীও আসতে পারে। কিন্তু এগুলো সব সময় সাজানো লাগবে গুরুত্বের ভিত্তিতে, Top-Down এপ্রোচেই।

আমার মতে উচ্চশিক্ষায় যে বিষয়ে গবেষণার আগ্রহী তার সাথে সরাসরি সম্পর্কিত কাজগুলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত এই ধরণের কাজগুলো বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়েই হয়, কাজেই বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক কথাগুলো একদম উপরের দিকে নিয়ে আসতে পারেন। মাঝের অংশের গুরুত্ব কিঞ্চিৎ কম, কাজেই ওখানে আনতে পারেন সেই বিষয়গুলো যেগুলো জানলে ভালো, কিন্তু জরুরী নয়। যেমন এক্ষেত্রে হয়তো আপনি বলতে পারেন আপনি কলেজে বা অন্য কোন পর্যায়ে কী করেছিলেন যেটা আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনায় প্রভাব ফেলেছিলো, যে প্রভাব আবার উচ্চশিক্ষায়ও ফেলতে পারে। শেষে আপনি কী করতে চান, কোথায় নিজেকে দেখতে চান - কেন এই প্রোগ্রাম, কেন এই এডভাইজর পছন্দ এসব নিয়ে আলাপ করতে পারেন শেষের দিকে, যা যা ভূমিকায় বলেছেন তার উপসংহার হিসাবে।

আমার SOP এর ভিত্তিতে উদাহরণ দেই: আমি আমার SOP তে শুরুর দিকে আলাপ করেছিলাম মাস্টার্স করার সময় কী নিয়ে কাজ করেছি, আর মাঝের দিকে আলাপ করেছিলাম ছাত্রাবস্থায় শখের বশে যে সব প্রোজেক্ট নিয়ে কাজ করেছি করেছি সেগুলো নিয়ে (IISEM, Linux Brightness Controller), ঐগুলোর অভিজ্ঞতাগুলো কীভাবে আমাকে মাস্টার্সে সাহায্য করেছে আর আমার বর্তমানে যেসবে আগ্রহ সেগুলোতে কীভাবে সাহায্য করবে। প্রত্যেকটা ধাপে আমি আবার ব্যখাও করেছি কেন এর। যেমন Brightness Controller টা শুরুতে আমার প্রোজেক্ট হলেও এটার মাধ্যমে দেশ বিদেশের অনেকের সাথেই কাজ করার অভিজ্ঞতা হয়েছে আমার, যেটা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে আমাকে পরিণত হতে সাহায্য করেছে। আর যেহেতু এটা অনেক স্টার পেয়েছে গিটহাবে, সুতরাং আমি এটাও ইঙ্গিত করতে পেরেছি যে আমি মানুষের সমস্যাগুলো ধরতেও পারি, সমাধানও করতে পারি! শেষের দিকে আলাপ করেছি আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসাবে যোগদান করার পর কী নিয়ে গবেষণা শুরু করেছিলাম, কেন শুরু করেছিলাম আর সেগুলো থেকে কী প্রকাশনা করেছি, আর ভবিষ্যতে আমি কোথায় নিজেকে দেখতে চাই, কেন দেখতে চাই।

৩) শেষ কথা

SOP লেখা নিয়ে বিস্তর গাইডলাইন আছে। গাইডলাইন দেখতে পারেন, কিন্তু কখনোই অন্যের SOP দেখে লেখা শুরু করবেন না। অন্যেরটা না দেখে লেখা শুরু করলে আপনি বাধ্য হবেন নিজের অভিজ্ঞতা, নিজের স্বকীয়তা বজায় রেখে লিখতে। কিন্তু অন্যেরটা দেখলে আপনার সেই নিজস্বতা নষ্ট হবে, এটা মোটামুটি নিশ্চিত। কারণ নিজের অনেক অভিজ্ঞতার কথা মনে থাকবে না, আরেকজন কী লিখেছে সেটা মনে করতে গিয়ে! কাজেই নিজের স্বার্থেই অন্যেরটা না দেখে লিখুন। লেখা শেষ হলে তখন আপনি ধারণা নিতে, আরো ভালো করতে অন্যেরটা দেখতে পারেন।

আর অনলাইনে অনেক গাইডলাইন আছে, SOP তে কী থাকা উচিৎ, কিভাবে প্ল্যান করা উচিৎ, কী থাকা উচিৎ না ইত্যাদি। আমার পছন্দের কয়েকটা দিয়ে দিলাম, আশা করি কাজে লাগবে।

সবার জন্য শুভকামনা রইলো। কোন প্রশ্ন থাকলে এখানে, বা কমেন্টে করবেন; আমি চেষ্টা করবো যথাশীঘ্র উত্তর দেবার।

কৃতজ্ঞতা স্বীকার

  • বন্ধু রায়হানের প্রতি, ও না বললে এই লেখাটার প্রয়োজনীয়তা টের পেতাম না
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের ডঃ মোঃ মামুনুর রশিদ স্যারের প্রতি। আমার ব্যাচেলরস ফাইনালে প্রোজেক্ট রিপোর্ট নিয়ে যাওয়া মাত্র উনি বলেছিলেন, যার দুঃখ সেই বুঝে, সুতরাং উনি জানতে চান আমার প্রোজেক্টে কী করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয়েছিলো, কেন কষ্ট হয়েছিলো। স্যারের ব্যখার পর থেকেই যার দুঃখ সেই বুঝে কথাটা মাথায় রাখার চেষ্টা করি, আর বুঝার চেষ্টা করি অন্যদের কষ্ট কীসে হয়েছে, কেন হয়েছে। 🙂

To comment as guest, click on the field "Name". The option to do so will become visible.
লগইন ছাড়াই কমেন্ট করতে নাম এ ক্লিক করুন, দেখবেন তার নিচেই আছে অতিথি হিসাবে কমেন্ট করার অপশন।

Copyright © 2019-2050 Amit Seal Ami